জেলা প্রতিনিধি, যশোর | প্রতিদিনবাংলা.কম
জীবনের ৩২ বছরে হাজােরা শিক্ষার্থীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছেন শাহীনুর রহমান। তাইতো বিদায়ের দিনে সেই আলোকিত শিক্ষার্থীরাই প্রিয় শিক্ষককে চমকে দিয়েছেন ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুষ্প সজ্জিত পানিতে পা ধুয়ে, সু-সজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে বিদায় দেওয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষক শাহীনুর রহমানকে। তিনি যশোর সদর কচুয়া ইউনিয়নের পূর্বআবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
সোমবার সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের শেষ কর্মদিবসে ব্যতিক্রমী এই বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্যেও মলিন ছিলো সকলের হৃদয়। তাইতো বিদায়ের শেষ মুহূর্তে অশ্রুসিক্ত হয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ উপস্থিত অতিথিরা। আবেগে আপ্লুত হয়েছেন প্রধান শিক্ষক শাহীনুর রহমানও।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, ১৯৯২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন শাহীনুর রহমান। দীর্ঘ এই কর্মজীবনে তার মেধা ও শ্রম দিয়ে নান্দনিক রূপে সাজিয়েছেন বিদ্যালয়টিকে। গড়েছেন হাজারো আলোকিত মানুষ।একবার উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘ শিক্ষা জীবনে শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো স্নেহ মমতায় বড় করে তুলেছেন। শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি পেয়েছেন গ্রামের মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধা। তার এই বিদায় বেলায় ব্যথিত তারাও। প্রিয় শিক্ষকের শেষ জীবন যেন স্বাচ্ছন্দ্যে কাটে সেই দোয়া করেছেন তারা।
‘শিক্ষার্থীরা তাদের জীবন গড়ার ক্ষেত্রে যেন সত্যের পথে থাকে কর্মজীবনে সেই প্রচেষ্টায় চালিয়েছি। কর্মদিবসের শেষ দিনে সবার কাছে যে ভালোবাসা পেয়েছি তা আমার জীবনকে স্বার্থক করেছে। আজ বুঝতে পারছি যৌবনে যে সিদ্ধান্তকে ভুল ভেবেছিলাম আজ তা জীবনের সবথেকে বড় প্রাপ্তিতে পরিণত হয়েছে।’ আবেগঘন কণ্ঠে এমনটাই বলছিলেন শাহিনুর রহমান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়টির সভাপতি খাজানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. আসাদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আনোয়ার, কচুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ মাহমুদ হোসেন প্রমুখ।