Friday, November 21, 2025
spot_img
Homeবাংলাদেশসব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে ৯৩% চাকরি বাকি ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে!

সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে ৯৩% চাকরি বাকি ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে!

  • বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ।
  • ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ।
  • প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ।

বিশেষ প্রতিবেদক | প্রতিদিনবাংলা.কম

সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। এ ব্যবস্থা রেখে গতকাল সোমবার রাতে প্রজ্ঞাপন অনুমোদন করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি আজ মঙ্গলবার জারি হবে বলে সরকারের একাধিক মন্ত্রী জানিয়েছেন।

আপিল বিভাগের রায়ের ভিত্তিতে সরকার কোটা নির্ধারণ করেছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। ফলে আপিল বিভাগের রায় প্রতিপালন করেই কোটাব্যবস্থার সংস্কার করা হয়েছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার, যা এখনো বহাল আছে। এর মধ্যে গত রোববার সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এ বিষয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপন দেখে তাঁরা তাঁদের পরবর্তী অবস্থান জানাবেন। এদিকে রায়ের পরদিনই গতকাল এ–সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন বিষয়ে অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুমোদিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে সরাসরি নিয়োগে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। বাকি পদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা নতুন নয়, ১৯৭২ সাল থেকেই বিভিন্ন হারে কোটা চলে আসছে। সরকারি চাকরিতে ২০টি গ্রেড আছে। সরাসরি নিয়োগ হয় মূলত ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এই অগ্রাধিকার কোটার মধ্যে ছিল ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা ও ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা। পরে ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু করে মোট কোটা দাঁড়ায় ৫৬ শতাংশে। শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল। পরে এ কোটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তারপর নাতি-নাতনিদের যুক্ত করা হয়।

২০১৮ সালে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সব কোটা বাতিল করা হয়। তবে ১৪তম থেকে ২০তম গ্রেডে (মূলত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) কোটা ছিল। যদিও প্রতিষ্ঠান ভেদে এসব পদের কোটায় কিছু ভিন্নতা আছে। অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগও হয় আলাদা নিয়োগবিধিতে।

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে রোববার আপিল বিভাগ যে রায় দেন, তাতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে নিয়োগে ৯৩ শতাংশ মেধাভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়। বাকি পদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়। তবে রায়ে আদালত বলেছেন, এই নির্দেশনা ও আদেশ সত্ত্বেও সরকার প্রয়োজনে ও সার্বিক বিবেচনায় নির্ধারিত কোটা বাতিল, সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবে।

এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকার চাইলে আদালতের রায় অনুযায়ী পরিবর্তন, পরিবর্ধন করতে পারে। বিশেষ করে নারী কোটা একেবারে না উঠিয়ে কিছু পরিমাণ রাখার পক্ষেও মত এসেছে। আবার জেলা কোটার পক্ষেও কেউ কেউ মত দিচ্ছেন। অন্যদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখার কথা বলা হলেও বাস্তবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরিযোগ্য বয়সী সন্তান খুব একটা থাকার কথা নয়।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার এখন আদালতের রায়ের বাইরে ভিন্ন কিছু করতে চায়নি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের মূল দাবি পূরণ হলো। এখন সমস্যার সমাধান হবে বলে তাঁরা মনে করেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments