সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | প্রতিদিনবাংলা.কম
২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঘোষণা করেছে তাদের পূর্ণ নির্বাচনী প্রস্তুতি। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যে ৩০০ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ এবং প্রচারণা চালাচ্ছেন পুরোদমে।
🔍 মূল পয়েন্টসমূহ:
- জামায়াত ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে
- জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের জন্য আলাদা স্ট্র্যাটেজি
- তরুণ ও প্রথমবারের ভোটারদের ওপর বিশেষ জোর
- ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পাশাপাশি সেবামূলক কার্যক্রম
- বিতর্কিত প্রার্থী বাদ দিয়ে ক্লিন ইমেজ প্রার্থী বাছাই
- প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ ও নির্বাচনী জরিপ সম্পন্ন
- দলীয় সূত্র মতে, কিছু আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে
📌 নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ও জামায়াতের প্রস্তুতি
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬-এর রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে এবং ডিসেম্বরে তফসিল প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীর তৎপরতাও বেড়েছে। দলের প্রার্থী মনোনয়ন বোর্ড গঠন করা হয়েছে এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক টিমগুলোকে সক্রিয় করা হয়েছে।
🧭 ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও আধুনিক কৌশলের মিশ্রণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াত এবার রাজনৈতিক কৌশল ও বক্তব্যে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে। অতীতের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে:
- সেবামূলক কার্যক্রমে (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা)
- স্থানীয় পর্যায়ে ধর্মীয় মূল্যবোধভিত্তিক জনসম্পৃক্ততা
- তরুণ ও প্রথমবারের ভোটারদের মন জয় করার কৌশলে
এছাড়া জামায়াত জানিয়েছে, আগ্রহ ও যোগ্যতা থাকলে অমুসলিম প্রার্থীও বিবেচনায় আনা হবে, যা দলটির রাজনৈতিক কৌশলে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
🗳️ জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ডুয়েল স্ট্র্যাটেজি
জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি জামায়াত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়েছে।
- ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই শুরু হয়েছে।
- দেশের ৬০% জেলা ও পৌরসভায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
- প্রতিটি স্তরে তৃণমূল সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনের কাজ চলছে।
📈 অভ্যন্তরীণ জরিপ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জামায়াত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সারাদেশে একটি প্রথম পর্যায়ের জরিপ পরিচালনা করে এবং তার ভিত্তিতে বর্তমান নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি:
- খসড়া প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে
- পোলিং এজেন্টদের প্রস্তুতি নিশ্চিত করা হচ্ছে
💬 নেতাদের বক্তব্যে নির্বাচনী অঙ্গীকার
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন:
“আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। কিছু আসনে নির্বাচন করা সম্ভব না হলেও প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই। নির্বাচন এখন জামায়াতের প্রথম অগ্রাধিকার।”
সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ জানান:
“এবার ক্লিন ইমেজ ও জনগ্রাহ্য প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।”
📍 অর্ধশত সাবেক ছাত্রশিবির নেতা নির্বাচনী মাঠে
দলীয় সূত্র মতে, এবারের নির্বাচনে অর্ধশতাধিক সাবেক ছাত্রশিবির নেতা জামায়াতের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- ময়মনসিংহ-৫: মতিউর রহমান আকন্দ (জামায়াতের মিডিয়া উইং)
- সিলেট-১: এহসানুল মাহবুব জুবায়ের
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩: নুরুল ইসলাম বুলবুল (ঢাকা মহানগর দক্ষিণ)
📊 বিভাগভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা
জামায়াতের অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী, নিচের বিভাগগুলোতে দলটি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে:
| বিভাগ | আসন সংখ্যা | প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা |
|---|---|---|
| রংপুর | ৩৩ | সব আসন |
| খুলনা | ৩৫ | সব আসন |
| রাজশাহী | ৩৯ | ১০–১২টি আসন |
| চট্টগ্রাম | ৫৮ | ১২টি আসন |
| বরিশাল | ২১ | ৩টি আসন |
| সিলেট | ১৯ | ৩টি আসন |
| ময়মনসিংহ | ২৪ | ২টি আসন |
| ঢাকা | ৭১ | শতাধিক আসনে চেষ্টা |



